নিউজ ডেস্ক ঃ
জাতীয় নাগরিক কমিটির মুখ্য সংগঠক সারজিস আলম বলেছেন, এই বাংলাদেশ চাঁদাবাজি ছিল, চাঁদাবাজি হচ্ছে। সিন্ডিকেট ছিল, সিন্ডিকেট হচ্ছে। সোনারগাঁয়ে শিল্প নগরীর বিভিন্ন জায়গায় দখলদারিত্ব যা ছিল তাই আছে। বিভিন্ন প্লট থেকে শুরু করে যতো টাকার ভাগবাটোয়ারা হতো এখন তার চেয়ে কম হয়না বরং আরও বেশি হয়। এগুলো বন্ধ করতে হলে সবাইকে ঐকবদ্ধ হতে হবে। মনে রাখতে হবে অভ্যুত্থানের লড়াইয়ে ৫-৬ জুনে আমরা ৫০০ জনও রাজপথ ছিলাম না। কিন্তু ৫ আগস্টে আমরা ৫ কোটি মানুষ পুরো বাংলাদেশের রাজপথে নেমেছিলাম। এজন্যই সময় দিতে হবে, সাহসীকতার সাথে রাজপথ থাকতে হবে। আমাদের উদ্দেশ্য যদি সৎ আর ন্যায় হয় তাহলে লড়াই দীর্ঘ হওয়া সত্বেও জয় সুনিশ্চিত।
রবিবার (১৬ ফেব্রুয়ারি) বিকেলে সোনারগাঁয়ের রয়েল রিসোর্টে নাগরিক কমিটি ও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ব্যানারে ‘আপনার চোখে নতুন বাংলাদেশ শীর্ষক ক্যাম্পেইন’ আয়োজনে তিনি এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, আমাদের রাজনৈতিক দল এই ফেব্রুয়ারি মাসের মধ্যে আসছে। অভ্যুত্থানের অন্যতম সমন্বয়ক আমাদের রাজপথের সহযোদ্ধা নাহিদ ইসলাম যিনি এই অভ্যুত্থানের ঘোষক, তাকে আমরা আহ্বান জানিয়েছে যেনো পুরো বাংলাদেশকে আবার আমরা সামনের সারিতে থেকে ঐক্যবদ্ধ করতে পারি। সেজন্য আমাদের নাহিদ ইসলাম যেনো ওই ক্ষমতার মন্ত্রনালয় ছেড়ে আবারও জনতার কাতারে এসে দাড়ান। আমরা বিশ্বাস করি যাদের কাছে ক্ষমতার চেয়ে জনতা আগে ছিল তারা জনতার ডাকে যেকোনো মূহুর্তের যেকোনো ক্ষমতার পথ ছেড়ে আবার জনতার কাতারে আসতে পারে। আমরা অতি দ্রুত সময়ের মধ্যে সকলকে একসাথে রেখে বাংলাদেশে আবার নতুন একটি দল করতে চাচ্ছি। আমাদের অনেক আশা-আকাঙ্ক্ষা রয়েছে। বিগত ১৬ বছর যে চর্চাগুলো ছিল আমরা এখন আবার সে চর্চাগুলো নতুন করে দেখতে পারছি। স্পষ্ট কথা যারা এইসব চর্চাগুলো করে এসেছে তাদের রক্তে ঐ চর্চা একদম মিশে গিয়েছে। সেই চর্চা থেকে বের হয়ে আসতে তাদেরকেই নেতৃত্ব দিতে হবে যারা এই অভ্যুত্থানে নেতৃত্ব দিয়েছিল। অভ্যুত্থানে নেতৃত্ব দেওয়া মানে কেন্দ্রীয় কয়েকজন না এই সোনারগাঁসহ সারাদেশের মানুষ। সারা বাংলাদেশে অভ্যুত্থানে যারা সামনের সারিতে থেকে নেতৃত্ব দিয়েছে তারাই আগামীর বাংলাদেশ বিনির্মাণে সামনে থাকতে হবে।
শেখ হাসিনাকে উদ্দেশ্য করে সারজিস আলম বলে, আপনাদের আমাদের লড়াইয়ে খুনি হাসিনা দেশ ছেড়ে পালিয়েছেন। খুনি হাসিনা নিজে বাঁচার জন্যে এবং পরিবারকে বাঁচানোর জন্যে পালালেও তার নেতাকর্মীদের নিয়ে যাননি। এককথায় খুনি হাসিনা তার দলীয় আ:লীগ, ছাত্রলীগ, যুবলীগকে টিসুর মতো ব্যবহার করেছেন। দলীয় তৃনমুল পর্যায়ের নেতাকর্মীদের চিন্তা করেননি। যারা তৃনমুল তাদের বিচারের মুখোমুখি রেখে সে পালিয়েছে।
রাজনৈতিক দলগুলোকে নিয়ে তিনি বলেছেন, বাংলাদেশে এখন অনেকে রাজনীতি করছে বিভিন্ন রাজনৈতিক প্ল্যাটফর্মের ব্যানারে। এখন চেনার সময় হয়েছে। বিগত ১৬-১৫ বছরে কোন নেতাকে কাছে পেয়েছেন এবং কোন নেতা আত্মগোপন কিংবা দেশের বাহিরে থেকে বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন সুবিধা আদায় করেছেন। বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের বহু নেতা আছে যাদের বিগত ১৬ বছর জনগণ খুঁজেও পায়নি। তারা এখন নতুন করে নতুন রুপে এই বাংলাদেশে এসেছেন। তারাই এখন আপনাদের মাঝে হাত গোলাচ্ছেন। কঠিন সময়ে যাদের পাশে পাওয়া যায়নি তাদেরকে নেতা হিসেবে মেনে নেওয়ার দয়া দেখাবেন না।
যদি তা দেখান তাহলে শেখ হাসিনা যেভাবে কঠিন সময়ে তার নেতাদেরকে ফেলে পালিয়েছে আপনাদের অবস্থাও একই হবে, আপনাদেরকেও ফেলে আপনাদের অনেক নেতা আবার জান নিয়ে পালাবেন।
অনুষ্ঠানে আরো বক্তব্য রাখেন আন্দোলনে শহীদ মেহেদী হাসানের বাবা সানাউল্লাহ, শহীদ ইমাম হোসেনর মা কোহিনুর ইসলাম, আহত শাকিল আহমেদ, নাগরিক কমিটির কেন্দ্রীয় নেতা তুহিন মাহমুদ, সোনারগাঁয়ের সংগঠক শাকিল সাইফুল্লাহ, বাঁধন, সাব্বির আল রাজসহ অনেকে।